Русские видео

Сейчас в тренде

Иностранные видео


Скачать с ютуб kobita abritti - হুলিয়া – নির্মলেন্দু গুণ (Huliya-Nirmolendu Gun) в хорошем качестве

kobita abritti - হুলিয়া – নির্মলেন্দু গুণ (Huliya-Nirmolendu Gun) 6 лет назад


Если кнопки скачивания не загрузились НАЖМИТЕ ЗДЕСЬ или обновите страницу
Если возникают проблемы со скачиванием, пожалуйста напишите в поддержку по адресу внизу страницы.
Спасибо за использование сервиса savevideohd.ru



kobita abritti - হুলিয়া – নির্মলেন্দু গুণ (Huliya-Nirmolendu Gun)

kobita abritti - হুলিয়া – নির্মলেন্দু গুণ (Huliya-Nirmolendu Gun) হুলিয়া নির্মলেন্দু গুণ পাঠ- অভ্র ভট্টাচার্য ----------------------------------------------------------------- আমি যখন বাড়িতে পৌঁছলুম তখন দুপুর, আমার চতুর্দিকে চিকচিক করছে রোদ, শোঁ শোঁ করছে হাওয়া। আমার শরীরের ছায়া ঘুরতে ঘুরতে ছায়াহীন একটি রেখায় এসে দাঁড়িয়েছে৷ কেউ চিনতে পারেনি আমাকে, ট্রেনে সিগারেট জ্বালাতে গিয়ে একজনের কাছ থেকে আগুন চেয়ে নিয়েছিলুম, একজন মহকুমা স্টেশনে উঠেই আমাকে জাপটে ধরতে চেয়েছিল, একজন পেছন থেকে কাঁধে হাত রেখে চিত্কার করে উঠেছিল;- আমি সবাইকে মানুষের সমিল চেহারার কথা স্মরণ করিয়ে দিয়েছি৷ কেউ চিনতে পারেনি আমাকে, একজন রাজনৈতিক নেতা তিনি কমিউনিস্ট ছিলেন, মুখোমুখি বসে দূর থেকে বারবার চেয়ে দেখলেন-, কিন্তু চিনতে পারলেন না৷ বারহাট্টায় নেমেই রফিজের স্টলে চা খেয়েছি, অথচ কী আশ্চর্য, পুনর্বার চিনি দিতে এসেও রফিজ আমাকে চিনলো না৷ দীর্ঘ পাঁচ বছর পর পরিবর্তনহীন গ্রামে ফিরছি আমি৷ সেই একই ভাঙাপথ, একই কালোমাটির আল ধরে গ্রামে ফেরা, আমি কতদিন পর গ্রামে ফিরছি৷ আমি যখন গ্রামে পৌঁছলুম তখন দুপুর, আমার চতুর্দিকে চিকচিক করছে রোদ, শোঁ-শোঁ করছে হাওয়া৷ অনেক বদলে গেছে বাড়িটা, টিনের চাল থেকে শুরু করে পুকুরের জল, ফুলের বাগান থেকে শুরু করে গরুর গোয়াল; চিহ্নমাত্র শৈশবের স্মৃতি যেন নেই কোনখানে৷ পড়ার ঘরের বারান্দায় নুয়ে-পড়া বেলিফুলের গাছ থেকে একটি লাউডুগী উত্তপ্ত দুপুরকে তার লক্লকে জিভ দেখালো৷ স্বতঃস্ফূর্ত মুখের দাড়ির মতো বাড়িটির চতুর্দিকে ঘাস, জঙ্গল, গর্ত, আগাছার গাঢ় বন গড়ে উঠেছে অনায়াসে; যেন সবখানেই সভ্যতাকে ব্যঙ্গ করে এখানে শাসন করছে গোঁয়ার প্রকৃতি৷ একটি শেয়াল একটি কুকুরের পাশে শুয়েছিল প্রায়, আমাকে দেখেই পালালো একজন, একজন গন্ধ শুঁকে নিয়ে আমাকে চিনতে চেষ্টা করলো- যেন পুলিশ-সমেত চেকার তেজগাঁয় আমাকে চিনতে চেষ্টা করেছিল৷ হাঁটতে- হাঁটতে একটি গাছ দেখে থমকে দাঁড়ালাম, অশোক গাছ, বাষট্টির ঝড়ে ভেঙ্গে যাওয়া অশোক, একসময়ে কী ভীষন ছায়া দিতো এই গাছটা; অনায়াসে দু’জন মানুষ মিশে থাকতে পারতো এর ছায়ায়৷ আমরা ভালোবাসার নামে একদিন সারারাত এ-গাছের ছায়ায় লুকিয়ে ছিলুম৷ সেই বাসন্তী, আহা, সেই বাসন্তী এখন বিহারে, ডাকাত স্বামীর ঘরে চার- সন্তানের জননী হয়েছে৷ পুকুরের জলে শব্দ উঠলো মাছের, আবার জিভ দেখালো সাপ, শান্ত-স্থির-বোকা গ্রামকে কাঁপিয়ে দিয়ে একটি এরোপ্লেন তখন উড়ে গেলো পশ্চিমে – -৷ আমি বাড়ির পেছন থেকে দরোজায় টোকা দিয়ে ডাকলুম,— “মা’৷ বহুদিন যে-দরোজা খোলেনি, বহুদিন যে দরোজায় কোন কন্ঠস্বর ছিল না, মরচে-পরা সেই দরোজা মুহূর্তেই ক্যাচ্ক্যাচ শব্দ করে খুলে গেলো৷ বহুদিন চেষ্টা করেও যে গোয়েন্দা-বিভাগ আমাকে ধরতে পারেনি, চৈত্রের উত্তপ্ত দুপুরে, অফুরন্ত হাওয়ার ভিতরে সেই আমি কত সহজেই একটি আলিঙ্গনের কাছে বন্দী হয়ে গেলুম; সেই আমি কত সহজেই মায়ের চোখে চোখ রেখে একটি অবুঝ সন্তান হয়ে গেলুম৷ মা আমাকে ক্রন্দনসিক্ত একটি চুম্বনের মধ্যে লুকিয়ে রেখে অনেক জঙ্গলের পথ অতিক্রম করে পুকুরের জলে চাল ধুতে গেলেন; আমি ঘরের ভিতরে তাকালুম, দেখলুম দু’ঘরের মাঝামাঝি যেখানে সিদ্ধিদাতা গণেশের ছবি ছিল, সেখানে লেনিন, বাবার জমা- খরচের পাশে কার্ল মার্কস; আলমিরার একটি ভাঙ্গা- কাচের অভাব পূরণ করছে ক্রুপস্কায়ার ছেঁড়া ছবি৷ মা পুকুর থেকে ফিরছেন, সন্ধ্যায় মহকুমা শহর থেকে ফিরবেন বাবা, তাঁর পিঠে সংসারের ব্যাগ ঝুলবে তেমনি৷ সেনবাড়ি থেকে খবর পেয়ে বৌদি আসবেন, পুনর্বার বিয়ে করতে অনুরোধ করবেন আমাকে৷ খবর পেয়ে যশমাধব থেকে আসবে ন্যাপকর্মী ইয়াসিন, তিন মাইল বিষ্টির পথ হেঁটে রসুলপুর থেকে আসবে আদিত্য৷ রাত্রে মারাত্মক অস্ত্র হাতে নিয়ে আমতলা থেকে আসবে আব্বাস৷ ওরা প্রত্যেকেই জিজ্ঞেস করবে ঢাকার খবর: – আমাদের ভবিষ্যত্ কী? – আইয়ুব খান এখন কোথায়? – শেখ মুজিব কি ভুল করেছেন? – আমার নামে কতদিন আর এরকম হুলিয়া ঝুলবে? আমি কিছুই বলবো না৷ আমার মুখের দিকে চেয়ে থাকা সারি সারি চোখের ভিতরে বাংলার বিভিন্ন ভবিষ্য়্ত্কে চেয়ে চেয়ে দেখবো৷ উত্কন্ঠিত চোখে চোখে নামবে কালো অন্ধকার, আমি চিত্কার করে কন্ঠ থেকে অক্ষম বাসনার জ্বালা মুছে নিয়ে বলবো: ‘আমি এসবের কিছুই জানি না, আমি এসবের কিছুই বুঝি না৷’

Comments