Скачать с ютуб তালা উপজেলার বিস্তারিত তথ্য এবং দর্শনীয় স্থানসমূহ। The Documentary of Tala Upazila, Satkhira в хорошем качестве

তালা উপজেলার বিস্তারিত তথ্য এবং দর্শনীয় স্থানসমূহ। The Documentary of Tala Upazila, Satkhira

#তালা_উপজেলার_বিস্তারিত #Tala_Satkhira #Tala_Upazila তালা উপজেলা বাংলাদেশের খুলনা বিভাগের সাতক্ষীরা জেলার অন্তর্গত একটি উপজেলা। এটি প্রতিষ্ঠিত হয় ১৯১৩ সালে এবং উপজেলা হিসেবে মর্যাদা পায় ১৯৮৩ সালে শহরের কেন্দ্রেই অবস্থিত উপজেলা পরিষদ। উপজেলা পরিষদের মূল ভবনটি ১৯৮৩ সালে নির্মিত হয়। ভবনটির সামনেই আছে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ছবি সংযুক্ত একটি স্মৃতিসৌধ। শহরের এক প্রান্তে রয়েছে ৫০ শয্যা বিশিষ্ট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স। যেটি অত্র এলাকার জনসাধরণের চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করে। তালা উপজেলার কথা ভাবলে সবার আগে চোখে ভেসে ওঠে কপোতাক্ষ নদের কথা। শহরের কোল ঘেষে বয়ে চলেছে কপোতাক্ষ নদ। প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্যে ভরপুর এই নদের তীরে বেড়ে উঠেছে সুন্দর একটি বাবলা বাগান। নদীটি যেন এলাকার মানুষের সুখ দুক্ষের সাথী। এখনো প্রতিবছর এই নদীতে নৌকা বাইচের আয়োজন করা হয়। কপোতাক্ষ নদের উপর অবস্থিত ব্রীজটি যাতায়াতের পাশাপাশি অবসর কাটানোর জায়গা হিসেবে ও পরিচিত। বিশেষ করে ঈদ এবং অন্যান্য ছুটির দিনে ব্রীজের উপর যেন মানুষের মিলনমেলা বসে। ব্রীজের একপাশে একটি ছোট মন্দির এবং উত্তরনের হেড অফিস আছে। অন্য প্রান্তে আছে কপোতাক্ষ মাধ্যমিক বিদ্যালয়। তালা উপজেলার সবচেয়ে আকর্ষণীয় এবং ঐতিহ্যবাহী নিদর্শন হলো তেতুলিয়া জামে মসজিদ যেটি তেতুলিয়া শাহী মসজিদ নামেও পরিচিত। তেতুলিয়ার জমিদার পরিবারের বংশধর “কাজী সালামাতুল্লাহ খান” এই মসজিদ প্রতিষ্ঠা করেন। মসজিদটি প্রায় দুই শতাব্দীর পুরানো। এই মসজিদটি ১৮৫৮-৫৯ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। তালা উপজেলার, তেঁতুলিয়া বাজারে এই মসজিদটি অবস্থিত। এলাকায় এটি “মিয়া মসজিদ” নামে পরিচিত। মসজিদের উত্তর পাশে রয়েছে ২ একরের এক বিশাল দিঘি। মসজিদ থেকে সিড়ি গিয়ে মিশেছে দীঘির তলদেশে। মসজিদটিতে ছোটো বড় মিলিয়ে রয়েছে ১৮ টি মিনার। মসজিদটি বর্তমানে বাংলাদেশ প্রত্নতত্ম অধিদপ্তরের সম্পদ। তালা সদরের আগোলঝাড়া ও ডাঙ্গা নলতা গ্রামের মধ্যবর্তীস্থানে, মাঠের মধ্যে দীর্ঘদিন পড়ে থাকা মাটির ঢিবিটির নাম ঝুড়ি ঝাড়ার মাঠ। জিনেরা পুকুর খননের পর সেখানে মাটির ঝুড়িগুলো ঝেড়ে ফেলে রাখে, এমন প্রচলিত প্রবাদ থেকেই উৎপত্তি হয় ঝুড়ি ঝাড়ার মাঠের। সম্প্রতি প্রত্নতত্ম অধিদপ্তর ঢিবির মধ্যে খনন করে খুঁজে পেয়েছে, মধ্যযুগের আমলের পুরাকীর্তির নিদর্শন এবং একটি বৌদ্ধ মন্দির, যা দেখতে সেখানে প্রতিদিন ভিড় করে হাজারো মানুষ। তালা উপজেলার ঘোষনগর গ্রামে রয়েছে “লোকনাথ মন্দির” নামে সুন্দর একটি মন্দির। অনিন্দ্য সুন্দর এই মন্দিরটি দেখতে দূর দূরান্ত থেকে অনেক মানুষ আসে। গ্রামবাসীর দীর্ঘদিনের প্রচেষ্টা এবং একাগ্রতার ফলেই গ্রাম্য পরিবেশে এত সুন্দর একটা মদির তৈরী করা সম্ভব হয়েছে। মন্দিরের ভেতরে বাবা লোকনাথের একটি সুন্দর মূর্তি আছে। প্রতি বছর এখানে নামযজ্ঞ অনুষ্ঠান হয়। আর মহা ধুমধামের সাথে পালিত হয় রথযাত্রা উৎসব। মন্দিরের সামনেই আছে যজ্ঞ অনুষ্ঠান করার জন্য একট চত্বর। এছাড়া মন্দিরের সাথে একটি আশ্রম ও আছে। নিশ্চিতভাবেই এই মন্দিরটি তালা উপজেলার গর্ব। তালা সদর থেকে ৩ কিলোমিটার পশ্চিমে গোপাল্পুর গ্রামে আছে একটি পুরাতন জমিদার বাড়ি। তৎকালীন জমিদার “বলাই ঘোষ” এবং “অবলা ঘোষের” স্মৃতি বিজড়িত এই বাড়িটি বর্তমানে বাংলাদেশ সরকারের অধীনে আছে। দুটি পরিবার এখানে অস্থায়ীভাবে বসবাস করে। শতবর্ষের পুরাতন এই বাড়িটি সত্যিই দেখার মত একটা জায়গা। গোপাল্পুর জমিদার বাড়ির পাশেই আছে এক বিশাল আম বাগান। যেটা আগে “বাবুর বাগান” নামে পরিচিত ছিলো। বন্যার কারণে কিছু আম গাছ মারা যাবার পর এখানে নতুন করে আর কিছু গাছ লাগানো হয়। পরবর্তীতে এই আম বাগানটিকে একটি পার্কে রুপান্তরিত করা হয়েছে। নাম দেওয়া হয়েছে “গোপাল্পুর খোলা জানালা ইকো পার্ক” বর্তমানে এই পার্কটি একটি জনপ্রিয় পিকনিক স্পট হয়ে উঠেছে। এক পাশে বয়ে চলা খাল, এক পাশে জমিদার বাড়ি আর চারিদিকে আম বাগান, এই সবকিছু মিলে পার্কটির পরিবেশ অসাধারণ। অবসর কাটানোর জন্য দারুন একটি জায়গা এটি। তালা সদর থেকে বেশ কিছুটা দূরে দলুয়া বাজারের নিকট “গাছা” গ্রামে রয়েছে সুন্দর একটি মন্দির। যেদিকে চোখ যায় শুধুই মাছের ঘের। আর তার মাঝে এই মন্দিরটি দেখলে সত্যিই চোখ জুড়িয়ে যায়। অবহেলিত এবং অনুন্নত এই গ্রামে মন্দিরটি যেন সকলের প্রতিনিধিত্ব করছে। তালা এবং কপিল্মুনির মাঝে গংগারাম্পুর গ্রামে রয়েছে একটি বিশাল সাইক্লোন শেল্টার। আগে প্রতিবছর এই এলাকায় বন্যা হতো। তাই বন্যাকালীন সময়ে এলাকার মানুষের আশ্রয়ের জন্য তৈরী করা হয়েছে এই সাইক্লোন শেল্টার। বর্তমানে এটি প্রাথমিক বিদ্যালয় হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। পাটকেলঘাটার অদুরে একটি গ্রামে রয়েছে আরো একটি সুন্দর মন্দির। তালা মহাশ্মশানঃ কপোতাক্ষ নদীর তীরে অবস্থিত তালা মহাশ্মশানটি যুগযুগ ধরে মানুষের অন্তিম কালের সাক্ষী হয়ে রয়েছে। বর্তমানে এই শ্মশানে বৃহৎ একটি মন্দির রয়েছে এবং আরো একটি মন্দির নির্মানাধীন রয়েছে। ততকালীন দানবীর স্বর্গীয় যতীন্দ্র নাথের প্রচেষ্টায় এই শ্মশানে একটি চিতা, এবং একটি বিশ্রামাগার গড়ে ওঠে। কালীবাড়ীঃ তালা উপজেলার কথা বললে কালীবাড়ির কথা না বললেই নয়। এটি গোপালপুর গ্রামে অবস্থিত। প্রতিবছর জৈষ্ঠ মাসের ১৭ তারিখে এখানে এক বিশাল যজ্ঞানুষ্ঠান হয়। এই যজ্ঞ চত্বরটিও “স্বর্গীয় যতীন্দ্র নাথের” তৈরী। শিক্ষাক্ষেত্রে তালা উপজেলার অর্জন যথেষ্ঠ ইর্ষনীয়। তালা বাজারেই রয়েছে একটি সরকারী কলেজ, যেটা এই এলাকার শিক্ষা ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি অবদান রাখে। এই কলেজ থেকে লেখাপড়া করে যাওয়া অনেক মানুষ এখন দেশ এবং দেশের বাইরে থেকে নিজ কর্মক্ষেত্রে সুনাম অর্জন করছে। চারদিক প্রাচীর দিয়ে ঘেরা এই কলেজে আছে একটি প্রসাশনিক ভবন, কলা ভবন এবং বিজ্ঞান ভবন। কলেজ মাঠের একপাশেই আছে আছে ছাত্রদের থাকায় জন্য হল। সবমিলিয়ে, কলেজের পরিবেশটি অনেক সুন্দর। এছাড়া ও আছে শিশুতীর্থ কিন্ডারগার্ডেন স্কুল, আল-আমিন একাডেমি, এবং তালা মডেল স্কুল। আর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের মধ্যে নিঃসন্দেহে সেরা হলো “তালা বি দে স্কুল” এবং “তালা গার্লস স্কুল”। ভালোবাসি, আমাদের প্রানপ্রিয় জন্মভূমি তালা উপজেলা কে।